দ অথবা বর্ণহীন ও অন্যান্য কবিতা || নম্ফোদ্র দিলাওয়ার

0

 

দ অথবা বর্ণহীন

কালো—— আলো বসিয়ে আন্ধাগুন্ধা ব্লেড
ঘুরাচ্ছে আলো ঘুরাচ্ছে—— গোপন খুন।
ফোঁটা ফোঁটা ফিনকি ফিনকি ঝরছে সাদা-
রুধির। আলো—— শব্দহীন চিৎকার গোঁ
গোঁ গোঙানো পার্শ্ববর্ত্তী শীৎকার রস রক্ত
গড়িয়ে আসছে; বেগে আসছে কামজাত

চিৎকার— শীৎকার—
শীৎকার— চিৎকার—

এ লীলা হেরিলে কালো আলো হয়ে যায়;
আলো কালো হয়ে যায়—— আমরা থিতু
গোঁড়ামিতে ঢালি জল ঢালি পানী বেগারে।
—— কুয়াশায় ডেকে গেছে প্রাগুক্ত এবং
বাস্তুঘুঘুরা। কুচিকুচি হয়ে পড়ে আছে জন-
কোলাহলে ঈশ্বর এবং জিন ইনসানিয়াত।

 

 

বাংলাদেশ

কোথায় যাবে রেখে? দু’উরুতে দুই বাহু মোর মাতৃত্বে মাথা; যেথা যাবে সেথায় যাব——
তুমি পরম উষ্ণ কাঁথা——

 

 

সলতেফুল (১১)

পূর্ব্বাহ্নের শুরুতে যে রং ঢেউ খেলে গেল অকারণে, সে কার হুক-খোলা বুক ছুঁয়ে এসেছে, সে কার বোন, কার প্রেমিকা; কোন্ অনাগত শিশুর মা, ও হিসেব কষার সময় নেই হাতে; ঘ্রাণ নাও। নেয়ামত মনে করে কদর কর। আজ দু’দিন হল, এর আগেও দেখেছি হয়ত, খেয়াল করিনি, দু’টা কুকুর অর্থাৎ কুকুর-কুকুরী অযথা ঝামেলা পাকাচ্ছে দিন-দুপুরে—— ব্যক্তি আক্রমণ করা স্বভাব নেই; এমনটা বলতে ভেবেছি অনেক, সমাধান খুঁজে পাওয়া যায়নি বলতেও ভাবতে হচ্ছে। অলস্য দুপুরের রোদ কেটে গেলেই জীবন চলে? না বরং থেমে যায়। এই ভাবনাটার উত্তর ভেবে পেয়েছি শীত আসার আগে কোন এক মগরেবের ওয়াক্তে।
এখন বুঝুন,
‘মায়ের ঢিলে জামার ভেতর কী আছে
জানতে চাওয়াটা অশ্লীল ব্যাপার
(জানাটা নই, জানতে চাওয়াটা)
ঠিক তেমনই কবিতার মানে জানতে চাওয়াটাও——’
নাড়ার আগুনে তাপানো শরীর, শরীরে জড়ানো উড়ানি ‘ধোঁয়া-গান্ধা’ ভরপুর। সেখানে কবিতার আবদার করে ফিরে আসেনি কখনও। পাতার নিভু নিভু আগুনে পুড়ে মরেছে আমার দাদার বয়োজীর্ণ আত্মা। আমি দেখিনি। মা দেখেনি। বাবা ছোট ছিল, বাবা বুঝেনি। অর্থাৎ কবিতা রহস্যামৃত্য।

 

 

আমার এই একটা অসুখ

কেঁপে ওঠে হৃদয়, থতমত খেয়ে পড়ে জবান
মুখ-ঘুরে পিছনে ফিরে আসি
কেঁপে কেঁপে হাহাকার—
আমার এই একটা অসুখ, মুখোমুখী বলতে পারি না সত্য কিংবা মিথ্যা।

কলম-কিবোর্ডে রাউণ্ডের পর রাউণ্ড সত্য-মিথ্যায় ঝাঁজরা করে দিতে পারি পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা, বুকের পর বুক অথচ রাজপথে-নদী-ঝিলে মিছিলের পর মিছিল ছুটে যায় হাঁসের; তর্জ্জনী উঁচিয়ে ঘোষণা দেয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধের জ্বালাময়ী ভাষণ— এই যে সে’দিন, দলছুট পাখীর বিদ্রোহে প্রবল ঝড় ওঠে, রক্তচোখের ঘামে ডানা ভিজে জমিনে পড়ে যায় তথাপিও থরথর শরীরে কূজন ওঠে——

অথচ সমাজের মাদারচোদেরা সামনে এলেই
অদৃশ্যের সেফটিপিন ঠোঁটে এঁটে যায়।

 

 

তুমি ভেবে বস না, তুমি একা

মানুষের কখন মরণ আসে কেউ জানে?
ধর আমার আগে চলে গেলে সে;
মানে তুমি ভেবে বস না, তুমি একা!
আমাকে ডেক ——
অথবা যদি আমার মরণ হয়; আমার কবর ঘাসে একটু পানী দিও…

 

 

 

নম্ফোদ্র দিলাওয়ার
জন্ম : ৩০ই অক্টোবর ২০০১। জন্মস্থান : ত্রিশাল, মৈমনসিংহ।
বেড়ে ওঠা : নিজ ভূমী এবং মানুষ চেনার ভূমী।
সম্পাদনা : ‘চিন্ময়’।
বর্ত্তমান অবস্থান : ময়মনসিংহ।
পেশা: আপনাকে ভুলে করি যে কবিতা চাষাবাদ, তার কোনো পেশা নেই; থাকলে দু’মুঠো ভাত।
মোবাইল: ০১৯৯৬৩৭৬৭১৬

অলঙ্করণ : হিম ঋতব্রত
প্রচ্ছদ : মেহেরাজ হাসান শিশির

{নম্ফোদ্র দিলাওয়ারের ‘‘দ অথবা বর্ণহীন ও অন্যান্য কবিতা’’ [বঙ্গীয় শব্দকোষ (শ্রী হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়), বঙ্গীয় শব্দার্থকোষ, ক্রিয়াভিত্তিক-বর্ণভিত্তিক শব্দার্থ বিধি (কলিম খান-রবি চক্রবর্ত্তী) ও প্রকৃতিপুরুষ ভাষাদর্শন অনুসৃত] চারবাক-এর বানান রীতিতে (যথাসম্ভবভাবে) সম্পাদিত ও প্রকাশিত হল।
— সম্পাদকীয়}

শেয়ার করুন

মন্তব্য

টি মন্তব্য করা হয়েছে

Leave A Reply

শেয়ার