হলুদ বন

0

কারো দিকে নয় এমনভাবে ছুটে আসে হলুদ বন। তোমার বা আমার বা কোন তৃতীয়জনের দিকে নয়। এমনভাবে ছুটে আসে হলুদ বন অথচ আমাদের দিকে নয়।

তুমুল হলুদ ফুটছে, তুমুল বাক্যাবলী হচ্ছে বিনিময়। ফুটন্ত হলুদ নিজের সম্পর্কে প্রচুর বলে। নিজের সম্পর্কে প্রচুর বলে বলে হলুদ হলুদতর হচ্ছে।

আমাদের প্রয়োজন ছিল একত্রে গোল হয়ে বসা। আমাদের প্রয়োজন ছিল গোল হয়ে একত্রে বসা। অথচ আমরা একজনের পর একজন হয়ে পান করি রক্তবর্ণ চা। সব চতুর্থ মুখ দেখা হয় না।

বন হলুদের ছবি, একটা উত্তম শৈলী। আমরা প্রচুর ধারণা করি, করি যে, আমরা বুঝে গেছি ছবিতে কেন হলুদ রঙ করা, কেনই বা তা হলুদবন। ছবিতে এই ছবির উপস্থিতি, হলুদরে উপস্থিতি আমাদের স্বস্তি দেবে নাকী?

কারো দিকে নয় এমনভাবে ছুটে আসছে হলুদ বন। তোমার বা আমার বা কোন তৃতীয়জনের দিকে নয়। এমনভাবে ছুটে আসছে হলুদ বন অথচ আমাদের দিকে নয়।

হলুদ বন ২

চিরকাল ভরে সবুজই বন! বোনেরা ও আমার মৃত বোনেরা অন্তর্হিত হয় এর দিকে। মুখ বাড়িয়ে ‘থ’ বনে যাই! একটা নিঃসঙ্গ ঘর ঘিরে ঘোর প্লাবনের মতো বন বেড়ে চলছে। দরোজার মুখে অসীম সংখ্যক বোনেরা কখন এসে দাঁড়ালে? তাদের গা’য়ের কাঁচা হলুদের মতো রঙ এই বিস্ময়ের বনে।

হলুদ বন ৩

বাড়ির দিকের খাপ খোলা। একটা চকচকে তরোয়ালের মতো এই বাড়ি আমি সমেত। একটা চকচকে তরোয়ালের মতো এই আমি বাড়ি সমেত। বিশাল হলুদ বন খাপের প্রতিবেশ। নারীর মতো খুশি ছড়ানো বনে বনে। অথৈ অথৈ!

সবুজ রঙ বাড়ি, গাঢ় সবুজ বাড়িটি অলস রোদ খায়। অলসের মতো রোদ খায়। স্রোতের মতো মোলায়েম নারী সব এই সব লক্ষ্য করে যায়। কোথায় কে আছে, কে কোথায় কতটুকু তরোয়ালের চকচকে আঁচে বাঁচে।

নারী সব এই সব লক্ষ্য করে। বাড়ির দিকে খাপ এখনো তখনো খোলাই পরে আছে। বিশাল হলুদ বন খাপের প্রতিবেশ হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।

হলুদ বন ৪

প্রচুর হলুদ ডুবো জাহাজ হয়ে গেলে কেউ গ্রাহ্য করে না তারা হলুদ। প্রচুর জাহাজ ডুবো হলুদে ভরে গেলে কেউ গ্রাহ্য করে না তারা হলুদ। তারা এক একটা জাহাজী বন। প্রয়োজনে ভুস করে ভাসে।

এখানে গাছে ডোরাকাটা হয়, বাঘ হয়। বনগাছ ও বাঘবন মিলে ছত্রখান হয় তারা। এক শরীরি হয় তবু। একনাম।

একজনই এখানে ডোরাকাটা ছবি আঁকে। একটা বাঘই ভয়ানক দেখে সুদৃশ্য লাফ ছাড়ে। তারা একে অপরের ডিঙ্গোতে থাকে অবিশ্রাম। ফের এক আঁচড়ে মিলেমিশে যায়।

আমাদের প্রয়োজন ছিল প্রথম মাদক ছুঁয়ে দেয়া। প্রথমবারের মতো মন্দের ভালো হওয়া। প্রথম তরঙ্গের ঘাড়ে চড়ে বাঘবনে যাওয়া। প্রচুর ডুবে যেয়ে ভেসে ভাসবার জুয়া ধরা। কেননা আমরাই বাঘ, আমরা বন, প্রচুর হলুদের জাহাজ আমরা।

হলুদ বন ৫

মায়াবী সকাল। মূহুর্তের পত্রালি ঝরছে শান্তিঅন্তপ্রাণ। বন হলুদের পত্রালি পরছে, ঝরছে মাটিতে শান্তিঅন্তপ্রাণ। মুখ দেখার ইচ্ছে থেকে দেখে অনিবার্য চোখ, সরল মুখ সকাল। বন শালিখের চোখ ফুটেছে, মুখ ফুটেছে, কোমল রোদ থেকে সে ডাকছে আমার বোন। মূহুর্তের পত্রালি ঝরছে, ঝরে যাচ্ছে, সকাল-সকাল, সকাল ও সকাল।

শেয়ার করুন

মন্তব্য

টি মন্তব্য করা হয়েছে

Leave A Reply

শেয়ার