নতুন সকালের প্রতীক্ষায় || শামীম রেজা

0

রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন ধারণায় বাংলাদেশ উন্মুক্ত বাজার নীতির মডেল অনুসরণ করে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সূচকে যে চলকগুলো শক্তিশালী হিসেবে দেখা যায় সেখানে এদেশের সামাজিক এবং দীর্ঘমেয়াদী টেকসই উন্নয়নে ইতিবাচক কোন নীতি আদৌ গ্রহণ করা হয়েছে কি না সেটা স্বাধীনতার অর্দ্ধশত বছর পর এসে হিসেব করলে বেরিয়ে আসবে।

বৈশ্বিক অর্থনীতির সাথে উন্নয়নে সামিল হতে হলে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা থাকতে হয় এবং সেই পরিকল্পনাকে যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করার জন্য প্রয়োজন হয় সময়োচিত দূরদর্শীতা আর বিষয় সংশ্লিষ্ট শিক্ষা। সে অর্থে ১ম, ২য়, ৩য় শিল্পবিপ্লব হয়ে ৪র্থ শিল্পবিপ্লবে পৃথিবী। শিল্প বিপ্লবের এই স্তরায়ন শিল্পবাদী কারখানা তাত্ত্বিকেরা করেছেন যেখানে প্রযুক্তিকে অর্থনৈতিক ক্রিয়ার অনুবর্ত্তী হিসেবেই কেবল বিবেচনা করা হয়। প্রযুক্তির এই অভিঘাতে মানুষের সাংষ্কৃতিক পরিস্থিতির অবস্থা কীরূপ প্রভাবিত হয় এবং সেই প্রভাব সার্ব্বজনীন মানবিকতার নিক্তিতে কতটা মানবিক সেটা দেখার ও কোন ব্যবস্থা রাখা হয়নি।

৪র্থ শিল্প বিপ্লবের ধারণা গোটা পৃথিবীর সামাজিক-রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে অন্য এক স্তরে নিয়ে যাওয়ার কথা বলছে। এখানে প্রযুক্তির যে বিষয়গুলো উৎপাদনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করার বিষয় নিয়ে কাজ চলছে সেগুলো হল, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও মেশিন লার্নিং, উন্নতমানের রোবোটিক্স ও অটোমেশন, ইন্টারনেট অফ থিংস, ব্লক চেইন প্রযুক্তি, থ্রি-ডি প্রিন্টিং, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, উন্নত মানের জিন প্রযুক্তি, নতুন ধরনের শক্তি।

বৈশ্বিক রাজনীতির ডিলটা আসে অর্থনীতির উপর দাঁড়িয়ে। সে অর্থে গোটা মানব বিশ্বকে তিনটা জাত/অংশে দেখা যেতে পারে ১. রাষ্ট্র ২. জনগন ৩. ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

রাষ্ট্র জনগনের জাগতিক জীবনের সামগ্রিক কল্যাণার্থে তৈরি হওয়া প্রতিষ্ঠান যা ধারাবাহিক ক্রম ব্যবস্থাপনার সচেতন পরিবর্ত্তনীয় মানুষের প্রয়াস। সে অর্থে রাষ্ট্রের জবাবদিহিতা থাকে সেটা যথাযথ প্রয়োগ হওয়া না হওয়া এখানে অপ্রাসঙ্গিক। ব্যবসায়ের যে ধারণা সেখানে মুনাফা একমাত্র মানদন্ড। ব্যবসায়ের প্রয়োজনে মানুষের মধ্যে ঐ ব্যবসায়ের পণ্যসমূহকে জায়েজ করার জন্য প্রতিষ্ঠান গুলো মানুষের ভৌগোলিক সীমানায় যতরকম সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ রয়েছে তার সবগুলোকে কাজে লাগায়। আপনার ধর্ম, সংস্কৃতি সব ঠিক আছে এগুলোর সাথে শুধু আমাদের পণ্যগুলো যোগ করে নিন তাহলে আপনাদের ধর্ম, সংস্কৃতি অধিক মাত্রায় উদ্ধার হয়ে যাবে। এই বোধে উত্তীর্ণ শিক্ষিত জনগন খুব দ্রুতই বিভক্ত হয়ে যায় ভোগবাদীতার নিক্তিতে।

প্রান্তিক হয়ে পড়া এই অসভ্য প্রতিযোগিতার বাইরে থাকা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সহ যারা এর বাইরে থাকতে চেয়েছে এই বাণিজ্যিক আগ্রাসন থেকে নিজেদের রক্ষা করতে চেয়েছে তাদের এই বর্ব্বর সওদাগরি সভ্যতা অনাধুনিক বা অসভ্য তকমা দিয়েছে।

অখন্ডায়নের এই যুগে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সভ্যতা-সংস্কৃতির মান বিচার এর ব্যতিক্রম হয়নি বিশেষত উপননিবেশিক প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থার দরুণ তা বেশ মজবুত হয়ে আছে শহুরে শিক্ষিত সমাজে। এতদ বিচারে জনগনের সাথে রাষ্ট্রের এবং রাষ্ট্রের সাথে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাথে জনগনের সম্পর্কটা প্রকৃত অর্থে কেমন এবং এই তিনের মিথস্ক্রিয়ায় সংস্কৃতি-সভ্যতার গতি সেই গতির নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা কার হাতে বেশি, কেন বেশি, বেশি হওয়ার দরুণ কী ঘটে সমাজে সেগুলো নৈর্ব্যক্তিকভাবে প্রাতিষ্ঠানিক পদ্ধতিতে বিশ্লেষণ করে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে শিল্প-বিপ্লবের কোন পণ্য আমরা শিল্পায়িত করব নাকি আমরা পণ্য হয়ে উঠব?

উন্নয়ন সূচকের গজকাঠি অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্মুখীনতাকেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে নির্দেশ করে। তো কল্যাণ রাষ্ট্র বা উন্নয়নমুখী রাষ্ট্র যাই হোক না কেন দেশজ অর্থনৈতিক নীতি-নির্ধারনের সাথে সাথে বৈশ্বিক রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ডিলিংসটাও করতে হয়। এর সাথে জড়িয়ে থাকে সাধারন মানুষের জীবন। ধর্ম, শিক্ষা, আচার, প্রথা ইত্যাদি; যেগুলো মানুষের জ্ঞান চর্চ্চার সাথে সম্পর্কযুক্ত।

প্রতিষ্ঠান হিসেবে “রাষ্ট্র” ব্যবস্থাপনার কাজ করছে রাজনৈতিক মানচিত্রের সীমানায় এবং অপরাপর রাষ্ট্রের সাথে বিভিন্ন চুক্তি-বিনিময় করে। রাষ্ট্রের এই প্রাতিষ্ঠানিক চরিত্র এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক চরিত্র একরকম হওয়ার কথা নয় উদ্দেশ্যগত ভিন্নতার কারণেই। রাষ্ট্র যদি মানবিক সূচকগুলোকে প্রতিষ্ঠা করতে চায় (যা আল্টিমেটলি উন্নয়ন সূচকগুলোর সাথেই সম্পর্কযুক্ত) ব্যক্তির ভিতরেও সেই প্রচেষ্টার অঙ্কুর থাকার কথা।

প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান-চর্চ্চার প্রায় সবগুলো মাধ্যম রাষ্ট্রের জীম্মায়। কিন্তু ব্যক্তি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মতই আত্ম-অর্থ-উন্নয়নের মডেলে চলার প্রবণতায় থাকার দরুণ তার অর্জ্জিত সকল জ্ঞান প্রয়োগ হচ্ছে ঔ জায়গাতে।

(প্রশ্ন হলো সেটা কীভাবে হতে পারে? কেন এমনটা ঘটে? সম্পদ মালিকানা ব্যবস্থাপনাগত কারণ? এগুলো কি দেশের ইন্টেলেকচুয়াল এবং রাজনীতিবিদরা বোঝেন না?)
তখন অর্জ্জিত জ্ঞানের সমস্ত ইথিকস-মরালিটি একটা গাজকাঠি দ্বারা জাস্টিফাইড হচ্ছে “আপনি বাঁচলে বাপের নাম”। সে অর্থে সভ্যতার অগ্রযাত্রায় জ্ঞানের বিকাশ ঘটেছে কিন্তু তার প্রবণতা আদতে কোনদিকে ধাবিত হয়েছে? উন্নয়ন যাই ঘটুক না কেন তা ব্যক্তির জ্ঞানের সাথে যদি মানবিকতাকে আধেয় না করতে পারে সেই জ্ঞান দানবীয় হয়ে ওঠবে।
আর সেই উন্নয়ন অতি দ্রুত অরাজকতার কারণ হয়ে উঠতে পারে। রাজনীতি আর অর্থনীতির এই রসায়নটা মার্কেটিং পলিসি সবচাইতে ভালো বোঝে এবং বাজার প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার শর্ত্তগত কারণেই বৈশ্বিক রাজনৈতিক (বিশেষ করে পুঁজিবাদী দেশগুলোতে) ক্ষেত্রে যে পরিবর্ত্তনই আসুক না কেন সেটা তাদের উপর কোন প্রভাব ফেলতে পারে না।

এ্যাডাম স্মিথের আগে বণিকবাদী অর্থনীতির যে রাষ্ট্রীয় দর্শন ছিল তার উপর দাঁড়িয়ে গোটা ইউরোপ তাদের রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক নীতি গ্রহন করেছিল এবং সেই মোতাবেক কার্যাবলী পরিচালনা করত। এমনকি মোটা দাগে বলতে গেলে নয়া সাম্রাজ্যবাদ নীতিতে ২য় বিশ্বযুদ্ধের পরেও এই প্রক্রিয়া চালু ছিল এবং বাজার দখলের নীতিতে সেই সামন্ততান্ত্রিক রাষ্ট্রীয় দৃষ্টিভঙ্গিই বহমান, মূলগত অর্থে বহাল আছে।

বণিকবাদী অর্থনীতির দর্শন ছিল নিজ দেশের উৎপাদিত পণ্য অন্য দেশে রপ্তানি করতে হবে সর্ব্বোচ্চ মাত্রায় আর আমদানি হবে সর্ব্বনিম্ন মাত্রায় সম্ভব হলে একেবারে আমদানি না করা ।

সেখান থেকে ইউরোপের দেশগুলো ছড়িয়ে পরে আফ্রিকা এবং এশিয়া সহ পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে। বাণিজ্যের নামে ধূর্ত্ততা, দস্যূবৃত্তি, চৌর্য্যবৃত্তি কি করে নাই তারা? এ ইতিহাস খুব বেশি দিন আগের নয়।

১৭৭৬ সালে এ্যাডাম স্মিথের ওয়েলথ অফ ন্যাশন বইটা প্রকাশিত হয়। এই বই এ এ্যাডাম স্মিথ শুধু অর্থনৈতিক নতুন তত্ত্বের কথাই বললেন না বরং উৎপাদন পদ্ধতি, সম্পদের মালিকানা ব্যবস্থা, সম্পদ বন্টন ব্যবস্থা, উৎপাদন সম্পর্ক, রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক নীতিতে রাষ্ট্রের ভূমিকা সহ বিনিময়, বাজার ব্যবস্থা, রাষ্ট্রের সাথে রাষ্ট্রের বিনিময় সম্পর্কের ধরণ ইত্যাদির মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করলেন এবং অর্থনীতির ভিত্তি কৃষি থেকে সরিয়ে শিল্পের উপর দাড় করানোর কথা বললেন। তার অদৃশ্য হাত এখনও বাজার ব্যবস্থায় চালান হচ্ছে!

১৭৮৯ সালে ফরাসি বিপ্লব হয় সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতা এই তিন মূলমন্ত্র কে আধেয় করে। রাষ্ট্রীয় পরিচালনা পদ্ধতি এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি সহ টোটাল সম্পদ ব্যবস্থাপনায় একটা পরিবর্ত্তন এলো।
প্রযুক্তির উন্নয়নে উৎপাদন ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্ত্তন এসেছিল এসময়।

এদিকে ভারতবর্ষে তখন কি ঘটতেছিল? যেখানে ১৭৮৯ সালে ফরাসি বিপ্লব হয়ে গেল ইউরোপে এবং কৃষককে মুক্ত করে দেওয়া হল ভূমিদাসত্ব থেকে সেখানে ভারতবর্ষে ১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রথা প্রবর্ত্তন করা হয়েছিল। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কতটুকু দেশজ বাস্তবতার নিরিখে হতে পেরেছিল? এদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে শিক্ষা ব্যবস্থার সম্পর্কটা কি বৈশ্বিকভাবে ইতিবাচক ছিল?

এরপর বাংলাদেশ নামক যে ভূ-খন্ড রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃত হল তার উন্নয়ন ভাবনা, নীতি দেশজ বাস্তবতা পেয়েছে কি না সেটা কেন্দ্র থেকে গ্রহন করা নীতি সমূহ সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগনের জীবনে কতটুকু ইতিবাচক প্রভাব রাখতে পেরেছে তা পরিসংখ্যান বলবে বিশেষত সমসাময়িক সময়ে পৃথিবীর আরো কিছু রাষ্ট্রের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ের অগ্রগতি তুলনামূলক বিশ্লেষণ করলে সে সত্য স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

এখন বৈশ্বিকভাবে ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের কথা বলা হচ্ছে।। ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের বেশ কিছু প্রভাবের কথা বলা হচ্ছে যেমন
— ২০২৫ সাল নাগাদ ১০০ বিলিয়ন সংযোগ তৈরির সম্ভাবনা

— অটোমেশনের কারণে চাকরির ঝুঁকি বাড়বে (যুক্তরাষ্ট্র: ৩৮% – ৪৭%, জার্মানি: ৩৫%, ব্রিটেন: ৩০%, জাপান: ২১%) এর বাইরে ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের কিছু চ্যালেঞ্জ এর কথা বলা হচ্ছে—

— তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ

— প্রযুক্তিগত সমস্যায় উৎপাদনে ব্যাঘাত

— ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা

— ইন্টারনেট ও অন্যান্য প্রযুক্তির মধ্যে অব্যাহত সংযোগ নিশ্চিত

অটোমেশনের কারণে বহু মানুষের কাজের সুযোগ হ্রাস ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের যেসব সম্ভাবনার কথা বলা হচ্ছে

— অটোমেশনের প্রভাবে কর্মক্ষেত্রে ঝুঁকি হ্রাস

— উৎপাদন শিল্পে নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি

— স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা খাতে বড় পরিবর্ত্ত

— বিশেষায়িত পেশার চাহিদা বৃদ্ধি

— সামগ্রিক জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন

বাংলাদেশ আসলে কোন পথে হাটছে? করোনা পরিস্থিতি ৪র্থ শিল্প-বিপ্লবকে আরো বেশি শক্তিশালি করেছে এবং ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের যে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক পরিণতি (যা উৎপাদন ব্যবস্থার আল্টিমেট পরিণতিও বটে) ঘটার কথা বলা হচ্ছিল সেটাই করোনা পরিস্থিতি দ্রুত বাস্তবায়ন করে দিচ্ছে। বাংলাদেশ দীর্ঘ উপনিবেশ শাসিত দেশ হওয়ায় এদেশের প্রাতিষ্ঠানিক বা ব্যক্তিক চিন্তা কাঠামো চিন্তা পদ্ধতি এখনও উপনিবেশের ভূত দ্বারা পরিচালিত হয়।

উদ্ভূত এই বৈশ্বিক রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতে বাংলাদেশের হাতে কি কোন নিজস্ব তত্ত্ব বা কাঠামো আছে যা এদেশ এবং দিশাহীন হয়ে পড়া নেতৃত্বহীন দুনিয়ার রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক দিশা দেখাতে পারে?

কোন শর্ত্তেই পৃথিবীকে আর বিভক্ত করা যাবে না
কোন অর্থেই মানুষকে আর উচু-নিচু ভেদে বিচার করা যাবে না।

বাংলাদেশকে এর প্রস্তুতিটা নিতে হবে যথাযথ ভাবে। দুনিয়াতে মারনাস্ত্র দিয়ে শাসন করার যুগ শেষ অথবা জাতীয়বাদ বা বৈশ্বিকতাবাদের যে উদারবাদী তত্ত্ব জ্ঞানকান্ডের সে ডিসকোর্সও সেকেলে হয়ে গেছে লকডাউনের এই কয় মাসে।

সুতরাং
প্রস্তুতি এবং প্রতিরক্ষার জায়গাটা হল এখন জ্ঞানচর্চ্চার জায়গাতে। এজন্য রাজনীতিটা সুস্থ এবং জনগনমুখী হয়ে দেশজ বাস্তবতায় হওয়া দরকার। ইউরোপীয় আলোকায়নের জ্যোতি আমাদের যৌথ জীবনের যে মৌলিক মানবিকতা বোধের শিকড় তা উৎপাটন করে ব্যক্তিবোধের ঘৃণ্য পারস্পারিকতাহীন অসামাজিক দায়হীনতার বোধকে সেঁটে দিয়েছে বাজারী ভোগ-বিলাসীতার প্রবৃত্তি দিয়ে। এখান থেকে শিক্ষা-জ্ঞান-মানবিক চর্চ্চার এই এ্যাকাডেমিক মূল্যবোধ থেকে বের না হতে পারলে আমাদের সামগ্রিক মুক্তি নেই। আর ইউরোপ তো ইতিমধ্যে জীবন এবং জগতের সম্পর্ক নির্ণয়ে বস্তুতে গিয়ে থেমে আছে। তাদের ও বের হওয়া প্রয়োজন এই জট থেকে।

৪র্থ শিল্প বিপ্লব হোক নতুন মানবিকতার স্লোগানে প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশ হোক উন্নয়নের শর্ত্তে সর্বাগ্রে বিবেচিত। করোনার এই মহামারি বিশ্ব নেতৃত্বকে, মানচিত্রিক সীমানায় রাষ্ট্রগুলোকে এবং বৃহত্তর সমাজের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান সমূহকে তেমন শিক্ষাই দিয়ে যাক বিশ্বের এই অহিংস ভাইরাসঘটিত মৃত্যুগুলো। পৃথিবী করোনা পূর্ব্ববর্ত্তী মানবিকতা থেকে উত্তীর্ণ হয়ে আরো উন্নত মানবিকতার স্তরে প্রবেশ করুক। নতুন সকালের প্রতীক্ষায়। ………

103257941_2637889163143197_6937312092358467498_oশামীম রেজা

জন্ম: ডিসেম্বর, ৩০, ১৯৮৯। পড়ালেখা : এম এস এস, অর্থনীতি, ইসলামী বিঃ কুষ্টিয়া। চাকরির পাশাপাশি “বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট”-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সভ্য এবং চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রধান।

শেয়ার করুন

মন্তব্য

টি মন্তব্য করা হয়েছে

Leave A Reply

শেয়ার