টি. এস. এলিঅট-এর কবিতাঃ জে. আলফ্রেড প্রুফ্রকের প্রেমগান

0

ভূমিকা ও অনুবাদঃ  জুয়েল মাজহা

[টি. এস. এলিঅটর সম্বন্ধে গৌরচন্দ্রিকা অনাবশ্যক বিশ শতকের সবচেয়ে আলোচিত এই কবির খ্যাতি ও প্রভাব তাঁর মৃত্যুর এতো-এতো বছর পরেও চূড়াস্পর্শী তাঁর প্রথম দিককার কবিতা সংকলন প্রুফ্রক অ্যান্ড আদার অবজারভেশনস আধুনিক ইংরেজি কবিতা তো বটে, গোটা বিশ্বকবিতার ইতিহাসে বড় এক মাইলফলক; নি:সন্দেহে বড়ো এক উন্মীলক-উন্মোচক ঘটনা জে. আলফ্রেড প্রুফ্রকের প্রেমগান তার প্রথম দিককার কবিতাবলির মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্যএলিঅটের কবি-প্রতিভা এ-কবিতায় যতোটা স্ফূর্তি পেয়েছে, তার অতি-বিখ্যাত কবিতা দ্য ওয়েস্ট ল্যান্ড বা পোড়ো জমিতেও ততোটা পায়নি জে. আলফ্রেড প্রুফ্রকের প্রেমগান  কাব্যগুণে ও সিদ্ধিতে পোড়ো জমি  কবিতাটির চেয়ে ঢের শ্রেয়তর
এই কবিতা যেন এক বীজ; যে বীজ এলিঅট নামের ভবিষ্য কাব্য-মহীরুহের ন্মের ইশারাবাহীএভাবে বললে খুব বেশি বাড়িয়ে বলা হয় নাএই কবিতাটি আধুনিক নগরজীবনের স্থূলতা, কদর্যতা, অন্তঃসারশূন্যতা আর অর্থহীনতার নতুন এক নান্দীপাঠ যেনকবিতাটিতে এলিঅটের অসাধারণ কবিত্বশক্তির, বিপুল কল্পনা-প্রতিভার চূড়ান্ত স্ফূর্তি ঘটেছে; প্রতিভা যেন শতবাহু, শতডানা বিস্তার করেছে এ-কবিতায়—– শুরু থেকে শেষ অবধি
এ-কবিতায় এলিঅট কোনো সময়-সঙ্গতি মেনে চলেন নি; যেনবা ইচ্ছে করেই স্বাভাবিক যুক্তিপরম্পরা ভেঙে দিয়েছেনএকের পর এক আপাত-বিসদৃশ ইমেজে এগিয়ে যেতে থাকে এ-কবিতাক্যাওস আর হারমনি একসঙ্গে ঘর করে এখানে; পরস্পরের সতীন বা অ্যাডভারসারি হিসেবে নয়বরং অল্টার ইগো হিসেবে জায়গা বদল করে চলে পরস্পরের সঙ্গেএলিঅট-বর্ণিতকল্পনার লজিক’ (“There is a logic of  imagination as well as a logic of concepts”) যেন প্রতিফলিত এ-কবিতার কাঠামো আত্মায়

প্রুফ্রকের প্রেমগান কবিতায় ৬ লাইনের এপিগ্রামটি নেওয়া হয়েছে দান্তের (Dante) দিভিনা কোম্মেদিয়া (Divina Commedia) ইনফার্নো অংশ থেকেসেখানে আমরা গুইদো দ্য মন্তেফেল্‌ত্রোর (Guido da Montefeltro) মুখে এমন এক ভয়াল নরকের বর্ণনা পাই, যে নরক থেকে নিষ্কৃতি লাভের কোনও আশা নেই

কবিতার নায়ক জে. আলফ্রেড প্রুফ্রকও এমনই এক মনো-নরকেরই বাসিন্দা; যে-নরক থেকে বের হবার কোনো পথ সে আর খুঁজে পায় না

আসলে কোনো চরিত্র নয় সে, বরং নিছকই একটি নাম; ক্রম ক্ষীয়মান, ক্ষীণতর এক স্বর কেবল
কবিতার শুরুতেই টেবিলে শায়িত ইথার-অবশ রোগীর সঙ্গে তুলনীয় সান্ধ্য-মুহূর্তের নাটকীয় বর্ণনা পাই; তা আসলে প্রুফ্রকের অর্ধচেতন মানসিক অবস্থাটিরই প্রতিফলপ্রুফ্রকের সিদ্ধান্তহীন, দ্বিধা-কম্পিত মনও অলস-বিবশ, নির্কোলাহল সন্ধ্যাটির মতোই অসাড়তালিপ্তপ্রুফ্রক নিজেকে আধুনিক নগরনাট্যের এক ট্র্যাজি-কমিক্যাল-হিস্ট্রিক্যাল অ-রোম্যান্টিক আর অরাজকীয় হ্যামলেটবলেই মনে করে; নিজেকে তার মনে হয় এক হাস্যাস্পদ, নিকৃষ্ট ভাঁড়; আর, অন্য সবার চোখে সে এক কাপুরুষ বা ঊন-পুরুষতার স্বগতোক্তির মধ্যে আমিতুমিআসলে তার নিজেরই দুই বিভক্ত সত্তাতার প্রেমগান তার আপন মনের ইনফার্নোর বাইরে কখনোই ব্যক্ত-উচ্চারিত হবে না, প্রুফ্রক এটাও আলব জানে কেবলি একঘেঁয়ে পথ, কুয়াশা-বেড়ালের ছবি, বাইবেলের জন দ্য বাপ্‌তিস্ত, লাজারাস, মিকেলেঞ্জেলো, সাগরতলের জলধিমহল, পাটল-লাল শৈবালের মালা-শোভিত সন্তরণপটু সাগরকন্যাদের দল আর শেক্সপিয়রের নাটকের কুশীলবগণ- —–সবাই যুগপ ভিড় করে আসে তার মনেতবু সবই ঝুট হ্যায় তার অকিঞ্চিকর জীবনে কেননা যাপিত জীবন তার ফ্যান্টাসি আর অতি-কল্পনায় উত্তাল-ফেনীল, টালমাটাল। অথচ বাস্তবে তা ততো বেশি নিস্তরঙ্গ, একঘেঁয়ে,পানসে-পাণ্ডুর আর নিরুসব  এই জীবন আদ্যন্ত অবদমনের নিয়তি-নিগড়ে বাঁধাআদ্যন্ত তা নৈরাশ্যমলিন, নিরুদ্যম, নিস্তরঙ্গ,বিষণ্ন আর করুণএকটিবারও সিদ্ধান্তে পৌঁছুতে পারে না সেতার অপৌরুষ-লাঞ্ছিত জীবন এতোই অর্থহীন যে, পিচফল খেতেও তার সাহসের দরকার পড়েতাই সে বলে: কফির চামচে আমি পরিমাপ করেছি জীবন তার এ-জীবন মানসিক মৃত্যুরই অন্য নামআর, প্রুফ্রক জীবন্ত লাশ এক; যে লাশ প্রুফ্রক বয়ে বেড়াচ্ছে নিজেরই কাঁধে।]

যদি জানিতাম, যারে আমি দিতেছি উত্তর
পুনরূপী সে ফিরিবে এ–মরজগতে
তবে ফের এই শিখা জ্বলিত না মোর
অপিচ কদ্যপি কেহ এ-পাতাল হ’তে
জীবন্ত ফেরেনি; শুনি যাহা তাহা সত্য হ’লে
তব কাছে করিব বর্ণন নিন্দাভীতি বিনা ।

তুমি আর আমি মিলে চলো তবে যাই,
যখন ছড়ানো সন্ধ্যা আকাশের গায়
ইথার-অবশ এক রোগী যেন টেবিলে-শোয়ানো;
চলো যাই, আধ-ফাঁকা পথগুলো দ’লে
এক-রজনীর-শস্তা-হোটেলে হোটেলে
অস্থির রাতের যতো ক্ষীয়মান প্রলাপ এড়িয়ে
আর ওই ঝিনুক-শোভিত আর কাঠের কুচিতে ছাওয়া রেস্তোরাঁর ভিড়ে
সেইসব পথের চলন
একঘেঁয়ে, ফন্দি-আঁটা তর্ক যেমন
এরা সবে নিয়ে চলে তোমায় বিহ্বলকর জিজ্ঞাসার দিকে…
জানতে চেয়ো না তুমি, অহো, ‘এটা কি’?
যাই আর চলো গিয়ে দেখি।
 

ঘরটিতে মহিলারা আসে আর যায়
মিকেলেঞ্জেলোর কথা জিভের ডগায়।
 

হলদে কুয়াশা তার পিঠ ঘষে জানালার কাচে,
হলদে ধোঁয়াটি তার নাক ঘষে জানালার কাচে,
জিভে সে চাটলো ওই গোধূলির যতোগুলি কোণ,
থমকে দাঁড়াল এসে নর্দমার খুঁটিগুলো ঘেঁষে,
পড়ুক পিঠেতে তার চিমনির যতো কালি-ঝুল,
বারান্দা গলিয়ে সে একবার হঠাৎ লাফাল,
আর এই আশ্বিনের সুকোমল রাতখানি দেখে,
বাড়িটাকে একবার পাক দিয়ে ডুবে গেল ঘুমে।
 
 
এবং আলবৎ সে তো পাবেই সময়।
সে-হলদে কুয়াশা এসে শার্সিতে পিঠ ঘ‌‌’ষে ঘ’ষে
চুপিসারে পথ বেয়ে চলে;
গড়তে একটি মুখ, তুমি চেনো, দেখা পেতে সেসব মুখের;
মিলবে সময় ঢের, মিলবে সময়;
মিলবে সময় ঢের হননের আর সৃজনের।
পড়ে আছে যতো কাজ, সেসবেরও রয়েছে সময়
আর যে-হাতেরা এসে উঁচিয়ে প্রশ্ন এক ছুড়ে দেয় তোমার থালায়
সেসব হাতেরও আছে অঢেল সময়,
সময় তুমিও পাবে সময় আমিও পাবো বাগে
এবং অযুতবার দ্বিধাচালে দোলার সময়,
এবং অযুতবার দেখা আর যাচিয়ে দেখার,
টোস্ট আর চা-পানের পর্বের আগে
 
 
ঘরটিতে মহিলারা আসে আর যায়
মিকেলেঞ্জেলোর কথা জিভের ডগায়।

এবং থাকবে হাতে অঢেল সময়
‘পারবো তো?’ আর, ‘আমি পারবো তো?’-এমত ভাবার।
থাকবে সময় ঢের পিছু হটে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামবার
গজিয়েছে টাক এক মাঝখানে চাঁদিতে আমার—
(বলবে সকলে: দ্যাখো, কেমন পাতলা হয়ে যাচ্ছে ওর চুল)
আমার প্রভাতী-কোট, আমার কলার, চিবুক ছুঁয়েছে নির্ভুল
নেকটাই শোভন-জাঁকালো, তবুও তা আটকানো একটি মামুলি পিনে স্থূল
(বলবে সকলে: ওর হাত-পাগুলো কেমন মাজুল)
তেমন সাহস কই
লণ্ডভণ্ড করবো নিখিল?
একটি মিনিটে ঢের রয়েছে সময়
দেখা আর যাচিয়ে দেখার, সে-ও আরেক মিনিটে তছনছ
 

যেহেতু জেনেছি সব, আমার সকল কিছু জানা-
চেনা ওই ভোরগুলি, অপরাহ্ন, গোধূলির ক্ষণ
কফির চামচে আমি পরিমাপ করেছি জীবন;
ওপাশের ঘর থেকে ভেসে আসা সুরের আড়ালে
পতনের লয়ে ওই লীয়মান স্বর আমি চিনি
তাই, কী করে সাহস আমি পাই?

আর ওই চোখগুলো চিনি আমি, চিনে গেছি সবই
যেসব চোখেরা এসে পরিপাটি তোমাকে সাজায়।
এবং যখন আমি, মেপে নেওয়া, পিনে-গাঁথা ছটফট করি
এবং যখন আমি, পিনে-গাঁথা, দেয়ালে কাতরাই
তাহলে কী করে শুরু করি
থুথুসহ ছুড়ে দিতে প্রত্যহের এঁটো-অবশেষ?
কী করে সাহস আমি পাই?
 
 
আর ওই বাহুগুলি চিনি আমি, চিনেছি সকলি-
বাজুবন্ধপরা ওই বাহুজোড়া নগ্ন আর শাদা
(তথাপি, বাতির আলোয় হাল্কা বাদামি পশমে তারা ঢাকা!)
এ-কি পোশাকবাহিত কোনো ঘ্রাণ
মন শুধু করে আনচান?
জোড়াবাহু টেবিলে এলানো কিবা একখানি শালে আছে ঢাকা।
সাহস কী করে আমি পাই?
আর, কী করে করবো আমি শুরু?
 

বলবো কী, ওই সরু পথ ধরে গেছি আমি গোধূলিতে হেঁটে
দেখেছি কতো না জানলার বাইরে-মাথা, হাতাঅলা-জামা গায়ে
নিঃসঙ্গ লোকেদের পাইপের ধোঁয়া উড়ে যেতে?
 

ক্রুদ্ধ ভোঁতা একজোড়া থাবা আমি যদিবা হতাম
বেড়াতাম সুমসাম সাগরের তল চিরে চিরে।
 
 
আর ওই অপরাহ্ন, সন্ধ্যা, আহা, কী সুখে ঘুমায়!
দীর্ঘ সরু আঙুলের আলতো পরশে মসৃণ,
ঘুমন্ত… ক্লান্ত…কিবা ভণিতায় পার করে দিন,
তোমার আমার পাশে, এখানে সে, মেঝেতে সটান
মনে আমি পাবো জোর, কুলফি-বরফ কেক চা-পানের শেষে
একটি নিমেষ, ওকে ঠেলে দিতে ওর নিজ সংকটের দিকে?
যদিও কেঁদেছি আর করেছি উপোস, কান্না আর করেছি প্রার্থনা,
যদিও দেখেছি আমি মুণ্ড আমার(ধরেছে কিছুটা তাতে টাক)
অর্ঘ্য সাজানো এক ঢাউস থালায়,
আমি নই প্রেরিত পুরুষ–- মহিমার কী-বা আছে তায়;
দেখেছি আমার সেই গরীয়ান ক্ষণ শুধু কেঁপে নিভে যায়
এবং দেখেছি আমি অনন্তের দ্বারী আমার পাতলুন ধরে
হাসিতে লুটায়,
অল্প কথায় বলি, মনে লাগল ডর।

পেয়ালা, মোরব্বা আর চা-পানের পর্ব শেষ করে
চিনেমাটি তৈজস, আর, তোমাকে-আমার-বলা গল্পের ফাঁকে
হতো কি তেমন কোনো লাভ
দ্বিধা ঝেড়ে হাসিমুখে যদি আমি দিতাম প্রস্তাব,
পৃথিবীকে দুমড়ে এক পিণ্ডবৎ আকার দিতাম
গড়িয়ে দিতাম একে বিহ্বল প্রশ্নের দিকে
আর বলতাম: “লাজারাস আমি, এসেছি মৃতের দেশ থেকে
তোমাকে জানাবো আমি, জানাবো সকল কথা, তাই ফিরলাম”
আর সে-রমণী যদি শিয়রে বালিশ পেতে বলে:
“ব্যাপারটা আদৌ আমি এভাবে ভাবিনি
এমত ভাবনা মনে স্থান দিইনি’’

আর তাতে মিলতো না কোনোই সুফল
মিলতো না ফায়দা কোনো তাতে
সূর্যাস্ত, দেউড়ি আর আর্দ্র যতো
পথের উপরে
উপন্যাস, চায়ের পেয়ালা আর মেঝে-গড়ানো যতো
স্কার্টের পরে-
এবং এই যে এটা, আরও বহু আছে তারও পর?
আসলে যা বলতে চাই, বলা সম্ভব?
জাদুর লণ্ঠন যেন স্নায়ুর বিন্যাস থরে-থরে উদ্ভাসিত
করেছে পর্দায়:
তাতে আর কী-বা ফল হবে
যদি সে-রমণী তার শিয়রে বালিশ পেতে, ছুড়ে ফেলে শাল
জানালার দিকে ঘুরে বলে:
“ব্যাপারটা আদৌ আমি এভাবে ভাবিনি
এমত ভাবনা মনে স্থান দিইনি ।’’
 

নই আমি হ্যামলেট, রাজার দুলাল, কপালে ছিলো না সেটা লেখা;
শুধু এক পার্শ্বচর লর্ড, দলভারী করাটাই কাজ
কুমারে মন্ত্রণাদান, একটি-দুটি দৃশ্য উন্মোচন
ধূর্ত, কূট, সতত সজাগ;
নগণ্য, অভাজন, এক ক্রীড়ণক, যদি কাজে লাগি ধন্য হই
মাথাটা কিঞ্চিৎ ভোঁতা, তবু মুখে বড় বড় বুলি পইপই
মাঝেমাঝে, হতে হয়, অন্যদের হাসির খোরাক
কখনোবা হদ্দ এক বোকার শামিল

বয়স হচ্ছে…আমি যাচ্ছি বুড়িয়ে
পরবো আমি পাতলুনের প্রান্ত মুড়িয়ে

টেরি কেটে ফেলবো পেছনে? আর, ভয় পাবো পিচফল খেতে?
ফ্যানেলের শাদা পাতলুন পরে হাঁটবো সৈকতে ।
কতো জলপরীদের গান আমি শুনেছি নীরবে কান পেতে

ভাবি না, আমাকে শোনাবে তারা গান

দেখেছি, ঢেউশীর্ষে চড়ে তারা সাগরে মিলায়
চিরে চিরে চলে তারা তরঙ্গের সফেদ কুন্তল;
বায়ুর চাপড় লেগে ক্ষণে শাদা, ক্ষণে কালো জল।
আমরা কতো না কাল কাটিয়েছি জলধির মহলে-মহলে
সাগরকন্যারা পাশে, পরেছে পাটল-লাল শৈবালের মালা
গেলাম অতলে ডুবে, যখন ভাঙালো ঘুম বিসদৃশ মানুষের গলা।

 

জুয়েল মাজহার । চারবাক                                                                             জুয়েল মাজহার

অনুবাদকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতিঃ
জুয়েল মাজহারের জন্ম ১৯৬২ সালে। নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া থানার গড়াডোবা ইউনিয়নের সাখড়া গ্রামে। পিতা মুকদম আলী, মা বেগম নূরজাহান (সরু)। দুজনই প্রয়াত। জন্মের প্রকৃত তারিখ জানা নেই। শিক্ষাসনদে বর্ণিত সন-তারিখ সমাজের কালেকটিভ মিথ্যাচারের অনুকরণ। দীর্ঘদিনের বন্ধু+স্ত্রী শিরিন সুলতানা ও পুত্র অর্ক মাজহারের সঙ্গে থাকেন ঢাকায়।
আগের পেশা বদল করে বর্তমান পেশা সাংবাদিকতা। কৈশোরে বাড়ি ছেড়ে নিরুদ্দেশযাত্রা। এরপর ভবঘুরে জীবন। পেটের দায়ে নানা কাজ। এখানে-ওখানে নানাঘাটে ভিড়িয়েছেন তরী। যৌবনের একটা বড় অংশ কেটেছে বৃহত্তর সিলেটের অরণ্য-পাহাড়ে আর নানা নদীকুলে। সেভাবে আর বাড়ি ফেরা হয়নি কখনো।
লেখেন মূলত কবিতা, বিচিত্র বিষয়ে প্রচুর অনুবাদও করেন।
 
প্রকাশিত কবিতার বইঃ
১. দর্জিঘরে এক রাত, (আগামী প্রকাশন ২০০৩ ও শুদ্ধস্বর প্রকাশ ২০১৪) ২০১৪ বাংলা একাডেমি ফেব্রুয়ারি বইমেলা।
২. মেগাস্থিনিসের হাসি, ২০০৯ (বাঙলায়ন; এটি ২০১৫ সালে নতুন পরিমার্জিত আঙ্গিকে বের করেছে শুদ্ধস্বর)।
৩. দিওয়ানা জিকির, ২০১৩ (শুদ্ধস্বর)।

প্রকাশিত অনুবাদগ্রন্থঃ
কবিতার ট্রান্সট্রোমার । (নোবেলজয়ী সুইডিশ কবি টোমাস ট্রান্সট্রোমারের বাছাই করা ৮০টির বেশি বাছাই করা কবিতার অনুবাদ সংকলন) ২০১২ (শুদ্ধস্বর)।

মার্কসবাদী। অলৌকিকে বা পরলোকে বিশ্বাস নেই। ঘৃণা করেন পৃথিবীকে খণ্ড-ক্ষুদ্র করে দেওয়া সীমান্ত নামের ‘খাটালের বেড়া’।

শেয়ার করুন

মন্তব্য

টি মন্তব্য করা হয়েছে

Leave A Reply

শেয়ার